চট্রগ্রাম থেকে,আরিফুল হাসান:
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ড নিয়ে বেশ উত্তপ্ত হয়ে আছে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবির। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক পরিসর থেকেও এই হত্যার তদন্তের জোর দাবি উঠেছে। এর মধ্যেই আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) দিকে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ।
গত বুধবার মুহিবুল্লাহর ওপর হামলার সময় তাঁর ভাই হাবিবুল্লাহ তাঁর সঙ্গেই ছিলেন। সে সময়ের পরিস্থিতি বর্ণনা করে আজ বৃহস্পতিবার দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমি মাস্টার মুহিবুল্লাহর ছোট ভাই হাবিবুল্লাহ। আমরা দুই ভাই এশার নামাজ পড়ে মসজিদ থেকে এসে আরএসপিইউআর অফিসে বসে বিভিন্ন বিষয়ে শলা-পরামর্শ করছিলাম। আমার ভাই রোহিঙ্গাদের ছোট-বড় সবাইকে নানাভাবে সহযোগিতা করত বলে সে খুব জনপ্রিয়। সে রোহিঙ্গাদের নেতা।
পেশায় শিক্ষক মুহিবুল্লাহ ছিলেন রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (আরএসপিইউআর) চেয়ারম্যান। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছিলেন এই নেতা। ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রোহিঙ্গাদের নিয়ে সমাবেশ করে আলোচনায় আসেন তিনি। রোহিঙ্গা অধিকার আদায়ের দাবি নিয়ে সোচ্চার এই নেতা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে আরএসপিইউআর কার্যালয়ে বিভিন্ন লোক আসতেন তাঁর সঙ্গে আলাপ করতে। গতকালও এসেছিলেন জানিয়ে হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘এশার নামাজের পর অফিসেও কিছু লোক এসেছিল। তাদের সাথে আলাপ করছিল (মুহিবুল্লাহ)।তিনি বলেন, ‘বাইরে থেকে ২-২৫ জন লোক অস্ত্র নিয়ে ঢুকেই গুলি করে আমার ভাইকে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দেয়।
কারা করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে হাবিবুল্লাহ বলেন, ‘যারা করেছে, তাদের দু-তিনজনকে আমি চিনি। তারা ক্যাম্পের পরিচিত মুখ। তিনি বলেন,‘এদের মধ্যে আবদুর রহিম লালু আরসার নেতা। আরেকজন ছিল কালো পোশাক পরা। এর বাইরে ছিল আরসা নেতা মুরশিদ। আরও যারা মেরেছে, তাদের সামনে আনা হলে আমি চিনব।
কেন মারা হলো? এ প্রশ্নের উত্তরে হাবিবুল্লাহ বলেন, রোহিঙ্গারা বিপদে-আপদে তাকে (মুহিবুল্লাহকে) পায়। সে নেতা হয়ে গিয়েছিল। যারা মেরেছে, তারা বলে‘তুই কিসের নেতা? আমরাই নেতা। ওরা বলেছে ‘তুই এখানে অফিস করতে পারবি না। নেতা হতে পারবি না। সব রোহিঙ্গা কেন তাকে ভালো জানে এটাই তাঁর কাল হয়েছিল।